শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যাংক খাতের আর্থিক দুর্নীতি, অর্থ পাচার, এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যাংকারদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্যাংকারদের অভিযোগ, ব্যাংকিং খাতের এই ভঙ্গুর অবস্থার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি দায়ী।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম কর্মদিবসে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকে বিক্ষোভের শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার (৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিতাড়নের দাবি জানাচ্ছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে এস আলম গ্রুপের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়, যেখানে চার ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগ করেন। এর মধ্যে কাজী সাইদুর রহমান বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন।
অন্যরা পদত্যাগ করবেন জানিয়ে ব্যাংক ত্যাগ করেন। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের খোঁজ মিলছে না এবং অনেকে ধারণা করছেন, তিনি দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন।
এদিকে, রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
এস আলম গ্রুপের কৃপায় পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) এবং অন্যান্য ব্যাংকেও বিক্ষোভ চলছে।
বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, যা আরও অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে।
ব্যাংক খাতে এই অস্থিরতা দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় গুরুতর প্রভাব ফেলছে এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ চরম কষ্টে আছে। ব্যাংকাররা দোষীদের দ্রুত বিচার এবং ব্যাংকিং খাতের শুদ্ধিকরণের দাবি জানিয়েছেন।