বাংলা প্রবাদ “কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ” যেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সর্বনাশী খেলার সাথে মিলিয়ে গেছে। তার এই কৌশলী খেলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা, যারা মৃত্যুর মুখে পড়ে যাচ্ছেন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জয়লাভের উদ্দেশ্যে।
নেতানিয়াহু আরেকটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যদিও বিশ্বজুড়ে শান্তি স্থাপনের আহ্বান জোরদার হচ্ছে। এবার তার যুদ্ধের পেছনে যে কৌশলী কারণ রয়েছে, তা ফাঁস হয়েছে।
জুলাই মাসের শেষ দিকে ইসরায়েল দুটি মিশন চালায় লেবানন ও ইরানে, যেখানে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা ফুয়াদ শুকর এবং ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এই ঘটনায় লেবানন ও ইরান ক্ষুব্ধ হলেও নেতানিয়াহুর হাসি ফুটে ওঠে, কারণ এতে তার রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
মেরিসা খুরসা, যুক্তরাষ্ট্রের উইলসন সেন্টারের মিডল ইস্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, মন্তব্য করেন যে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রতিবারই তার হত্যাকাণ্ডের সাফল্যে বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধ যতদিন স্থায়ী হবে, নেতানিয়াহুর ক্ষমতায় থাকার সম্ভাবনাও ততদিন বাড়বে। ফলে তিনি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হতে দিচ্ছেন না।
নেতানিয়াহুর ক্ষেত্রে এই কৌশল কাজ করেছে, কারণ ওই দুই হত্যাকাণ্ডের পর তার জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে। কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফটের ত্রিটা পারসি বলেছেন, ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা এবং মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথের সময় বেছে নেওয়া নেতানিয়াহুর পরিকল্পিত অপমান। এতে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্ভাবনা বন্ধ হয়ে গেছে।
নেতানিয়াহু এই চালে পেজেশকিয়ানের মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ শেষ করার যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনাও ধ্বংস করেছেন, যা তার রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার অন্যতম লক্ষ্য।