সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, ফলে নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এই নিয়ে চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো বন্যা দেখা দেওয়ায় সিলেটের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও, বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা সিলেটের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে বন্যার সৃষ্টি করেছে। সুরমা নদী এবং কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার ঝারিখাল কান্দি, দমদমা, পাতনিকোনা, বগাইয়া হাওর, হাদারবিল গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। নিচু এলাকার কিছু রাস্তা ও মাঠঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে, বিশেষ করে হাওরাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গোয়াইনঘাটের ঝারিখাল কান্দি গ্রামের মাঈনু উদ্দিন জানান, গত তিন দিনের মুষলধারে বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তাদের ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মুঈদ জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থার কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আরও ২-৩ দিন সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, টানা বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। ভারতের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল, যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ।