ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানির প্রভাবে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার ফলে জেলার তিন উপজেলায় শতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে, এবং রাস্তা-ঘাট, ঘর-বসতি সব কিছু পানির নিচে রয়েছে। এতে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি।
ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম, পরশুরামের মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ ও পৌরশহরের ৪৫টি গ্রাম, এবং ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার কারণে রাস্তা-ঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে, এবং কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চালেও বন্যার পানি পৌঁছেছে। স্থানীয়রা আশ্রয় খুঁজছেন এবং ত্রাণ সহায়তা পাওয়া জন্য অপেক্ষা করছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের একটি টিম স্পিডবোট নিয়ে বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে যাবে। জেলা শহর থেকে নদীপথ না থাকায় স্পিডবোট পরিবহনে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে স্থানীয় বিজিবি সদস্যরা।
এদিকে, নোয়াখালীতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কারণে পৌরসভা ও প্রায় সব উপজেলা পানিতে ভাসছে। গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহরে জলাবদ্ধতা বন্যার আকার ধারণ করেছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে, যা লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। পানি কমে গেলে প্রতিষ্ঠান চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।